ইলশেগুঁড়ি ২৯তম সংখ্যা (শারদীয়া)
ইলশেগুঁড়ি ২৯তম সংখ্যা (শারদীয়া)
অর্ধ শতাব্দী পার করে আজ আমি ক্লান্ত,
রানারের মতো দায়িত্বের বোঝা, নিয়মের বোঝা,
সংসারের বোঝা বইতে বইতে ক্লান্ত,,
ক্লান্তি শুধু কি শরীরে? মনের ক্লান্তি!
বাড়ি গাড়ি সবই আছে কিন্তু সুখ!
অ-সুখ বাড়িয়ে দিয়েছে সময়ের অঙ্কটাকে।
গড়-মিল, সুদ-আসলের অঙ্ক কষতে কষতে
কখন যে সাদা প্রলেপ পড়লো চুলে বুঝতেই পারিনি,
যেমন বুঝতে পারিনি তোমার নিঃশব্দে চলে যাওয়া।।
কলেজের প্রথম বর্ষ মনে হয় এই তো সেদিন
আলাপ সাহিত্যপাঠের আসরে,
ছাতিম গাছের নিচে বসে কত না অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কাটিয়েছি,,
রঙিন খামে ভরা চিঠি বুকের ধুকপুকানি
সবই কেমন হারিয়ে গেছে বেরঙিন হয়ে।
কলেজ চত্বরে লাল আবিরে রাঙানো দিন
খোঁপায় গুঁজে দেওয়া পলাশ ফুল,
পূর্ণিমায় রাতে নদীর পার ধরে হাতে হাত রেখে চলা,
কত না কথা দেওয়া-নেওয়া সবই হারিয়ে গেল নীরবে একদিন।
আজ কড়ির মতন আলোকমালায় সেজে উঠেছে আকাশ,
কক্ষ থেকে কক্ষান্তরে হারিয়ে গেছে সুখস্মৃতিগুলো,,
ঘুনধরা স্মৃতির গাছপাথর বয়ে চলেছি কত যুগ ধরে,
কৃষ্ণচূড়ার রূপের আগুন দেখে হিংসে জাগে মনে,
জীবন বয়ে চলে আপন স্রোতে।
যোগ বিয়োগের খাতা পুরোটাই ভুলে ভরা
মনে হয় মধ্য যৌবনের শেষ প্রান্তে এসে।
রাতজাগা পেঁচারা আমার মতই অপেক্ষমান,
জীবনের শেষ সলতেটুকু জ্বালিয়ে রেখেছি
বিবর্ণ পান্ডুলিপি বুকে নিয়ে॥