ইলশেগুঁড়ি ২৯তম সংখ্যা (শারদীয়া)
ইলশেগুঁড়ি ২৯তম সংখ্যা (শারদীয়া)
তুমি কি যমঘুম দিয়েছ, বাবা?
এদিকে যে বেলা গড়িয়ে সন্ধে হল;
বলো যদি – সাহস করে এবার তোমার ঘুমটা ভাঙাই!
বাপ-মা-হারা ওই বাচ্চাগুলোর মুখ চেয়ে
এবার অন্তত বিছানা ছাড়ো, হে বিশ্বপিতা!
ঘটোৎকচের ঘেরাও থেকে এসো
আজ উদ্ধার করি তোমায়;
চোখ খুলে দেখো, কবর জুড়ে শুয়ে আছে
তোমারই সদ্যোজাত সন্তানের সারি
কোথাও বা জ্বলছে চিতা যতদূর চোখ যায় –
ধূমপানের নেশায় মাতোয়ারা স্বর্গসুখ
সে তো শুধু তোমার কাছে
আর আমাদের এই মর্ত্যকে
এদিকে গ্রাস করেছে শুধু মণিকর্ণিকা ঘাট;
তাই তো তোমার জন্য দেখো, কী নিয়ে এসেছি –
লেটেস্ট ডিজাইনের এই হিয়ারিং এড – একদম ডিজিটাল!
যাতে তুমি আমাদের আর্তনাদ শুনে ওঠো –
মর্ত্যের আর্তনাদ তোমার কানে টিনিটাস হয়ে বাজতে থাকুক
হাইপেরাকিউসিস হয়ে তোমার মাথায় বাজ ফেলুক
আমাদের শবযাত্রা – জীবনগ্রহের এই শৃঙ্খলাবদ্ধ মৃত্যুরেখা!
এফোঁড় ওফোঁড় হওয়া হৃদয়ের রক্তমাখা আকুতি!
শীতসার গ্রহে এখনো বেঁচে থাকা শেষ কয়েকটি মানুষের
নোনা-ধরা চোখের অন্তিম প্রার্থনা –
বিশ্বপিতা, যে করে হোক তোমার শ্রবণশক্তি ফিরে পাও
আজ জেগে ওঠো বধিরের নিদ্রাগত স্বেচ্ছামৃত্যু থেকে –
জেগে ওঠো দুনিয়ার মালিক!