ইলশেগুঁড়ি ২৯তম সংখ্যা (শারদীয়া)
ইলশেগুঁড়ি ২৯তম সংখ্যা (শারদীয়া)
॥ ১॥
একতারার মনখারাপ কাল রাত থেকেই। সেই যে সরোদদাদা তাকে বলল, “যারা যমজ নয়, তারা তাদের আসল বাবা-মার বেবিই নয়, তাদের আসল মা’রা যমজদের মধ্যে যেটা ভালো ছানা সেটাকে নিয়ে যায়, আর খারাপটাকে হাসপাতালে রেখে যায়, আর যেসব বাবা-মাদের নিজেদের বেবি নেই, কিন্তু একটা ছোট্ট মানুষকে বড় করে তোলার খুব শখ, তাঁরা হাসপাতাল থেকে পছন্দমত একজনকে বাড়ি নিয়ে যান। তাকে একটু বড় করলে আবার হাসপাতালে গিয়ে আরেকজনকে আনতে পারেন, এরকম অনেকবারে অনেকজনকে আনতে পারে, কিন্তু একবারে ঐ একজনকেই...
তোমরা নিশ্চয়ই এটুকু পড়েই বুঝে গিয়েছো যে সরোদদাদার নিজের একজন যমজ আছে। হ্যাঁ, তার নাম সেতারদিদি। সেতারদিদি খুব ভালো, সরোদদাদার মত বদমাইশ নয়, পড়াশুনোতেও যেমন ভালো রেজাল্ট করে, তেমনি ব্যাডমিন্টন খেলেও অনেক প্রাইজ জিতে এসেছে, কত মিষ্টি গান গায়। আর সরোদদাদা? ওটা একটা ছুঁচো, সেই কবে একতারার একটা খুব সুন্দর ছবি এঁকে দিয়েছিলো বটে, কিন্তু আর ভালো কবে কী করেছে শুনি?
তবে সরোদদাদা আর সেতারদিদি ছাড়াও এবাড়িতে আরো যমজ আছেন, তাও একজোড়া নয়, আরো দু’দুজোড়া। একতারার বাবা আর জ্যেকু (এই নামটা প্রথম সেতারদিদি বলেছিল একতারা’র বাবাকে) যমজ, একতারার বাবার গোঁফ নেই, কিন্তু তাঁর জ্যেকু’র গোঁফ আছে, আর সরোদদাদা-সেতারদিদি’র বাবার গোঁফ আছে, কিন্তু তাদের জ্যেকুর গোঁফ নেই। কী বুঝলে?
তবে মেয়েদের তো গোঁফ-দাড়ি কিছুই গজায় না, সেটা একটা সমস্যা তাঁদের চেনার জন্যে। বিশেষ করে, তাঁরা যদি আবার একতারার মা ও মাসির মত হন, যাঁদের অভ্যেসই হল, বোনের সঙ্গে শাড়ি পাল্টাপাল্টি করে পরে অফিস চলে যাওয়া। তাই অনেক ভেবেচিন্তে একতারা ঠিক করেছে, যিনি ওকে সবসময়ে পড়তে বসতে দেরী দেখলেই ‘সেতারদিদিকে দেখে শেখ’ বলে বকুনি দেন, মাসের দ্বিতীয় আর চতুর্থ শনিবার যাঁর ছুটি থাকে (একতারার মা ব্যাঙ্কে চাকরি করেন), আর যাঁর চুলগুলো সোজা-সোজা, তিনি ওর মা। আর যিনি ওদের তিনজনকে এবছর থেকে একসঙ্গে স্কুলে নিয়ে যাচ্ছেন (একতারা এবারে ফাইভে উঠেছে, ফলে তার ডে-স্কুল শুরু হয়েছে), যাকে নালিশ করলে সরোদদাদাকে ম্যাক্সিমাম বকুনি খাওয়ানো যায়, আর যাঁর চুলগুলো একটু হলেও বেঁকা-বেঁকা (সেতারদিদি শুনে হেসে বলেছিল, ওটাকে নাকি কোঁকড়া চুল বলে) তিনি হলেন সরোদদাদা-সেতারদিদি’র মা, একতারার মাসি। মাসি বেশি ভালো, তাঁকে স্কুলে সর্বক্ষণ দেখতে পাওয়া যায়, স্কুলের লম্বা ছুটিগুলোতে তিনি বাড়ি থাকেন, তবে আজকাল তিনি বাড়িতে একতারাকেও ইংরেজি আর বাঙলা হাতের লেখা করাচ্ছেন, সেটা একদম ভালো হচ্ছে না।
কিন্তু সে যাই হোক, ছোটবেলা থেকে একতারা জেনে এসেছে, এবাড়ির সব্বার যমজ আছে, তার ছাড়া। সুতরাং অন্য বাড়িগুলোতেও অধিকাংশ লোকের যমজ থাকাটাই স্বাভাবিক। অন্ততঃপক্ষে যাদের বাবা-মা’রা তাঁদের বেবিদের সত্যিকারের বাবা-মা। তার বাবা-মা তাকে ভালবাসেন ঠিকই, কিন্তু কুড়িয়ে পাওয়া বেবিদের মতই, কম কম। নইলে তার মা কেন স্কুলের লম্বা ছুটিতে বাড়ি থাকেন না, সে কেন সেতারদিদির পুরনো সোয়েটার মাঝেমাঝে পরে আর সরোদদাদা’র পুরনো গল্পের বই প্রায় সময়েই পড়ে, কই তারা তো পুরনো কিছু কখনো পরেও না, পড়েও না। সে যখন নিজের যমজ না থাকার জন্যে প্রায় কাঁদো-কাঁদো, তখন সেতারদিদি তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্যে বলেছিল, “আচ্ছা, তোদের ক্লাসে যে এতজন ছেলে-মেয়ে আছে, তাদের কজন যমজ বল। সরোদকে জিগ্যেস্ কর, বাকি সবাইকেই কি তাদের বাবা-মা’রা কুড়িয়ে পেয়েছে?” এইটা শুনে সরোদদাদা সেতারদিদির দিকে তাকিয়ে একটা শয়তানি হাসি হেসেছিল, তারপরে খুব নাটুকে স্বরে বলেছিল, “সব্বার কপালে কি আর সত্যিকারের বাবা-মা’র সত্যিকারের ভালবাসা জোটে রে পাগলা!” কান্না চাপতে চাপতে ঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে আসার সময়ে সে সেতারদিদির বিরক্ত স্বর শুনতে পেয়েছিল, “তুই কী বদমাইশ রে সরোদ! জ্যেকু ট্যুরে গিয়েছে, মাসি’র কোয়ার্টার এন্ডের চাপ, এখন তুই মেয়েটাকে কাঁদালি, আজকে আর মা’র স্কুলের খাতা দেখা হবে না, তারপরে এই করতে গিয়ে রোব্বার আর মা আমাকে একজিবিশ্যনে নিয়ে যাবে না।’’
সেতারদিদিই ঠিক বলে, সরোদদাদা বদমাইশ। সরোদদাদা খুব বদমাইশ!
॥ ২॥
স্কুলে ক্লাস ফাইভের ছুটি হয় এক পিরিয়ড আগে। কোনদিন তখন একতারা গিয়ে স্কুলের লাইব্রেরিতে বসে থাকে, কোনও বই-টই পড়ে, কোনদিন বৃষ্টি না হলে, সে স্কুলের মাঠের বড় গাছটার তলায় বাঁধানো জায়গাটায় বসে উঁচু ক্লাসের গেমস, পিটি আর এক্সার্সাইজ দেখে। আজ কোনও ক্লাসের গেমস নেই, তাও একতারা মনখারাপ নিয়ে সেই গাছটার নিচেই গিয়ে বসেছিল। তার খালি মনে হচ্ছিল, তাকে কেউ ভালবাসে না, তার কেউ নেই, তার লাইফটাই বাজে। তার ভীষণ কান্না পাচ্ছিল। পিঠ থেকে ব্যাগ খুলে রেখে চুপ করে বসে কখন তার চোখ থেকে টুপ করে করে জল পড়তে শুরু করেছে, তা সে নিজেও জানে না। হঠাত গম্ভীর স্বরে “অ্যাই মেয়ে, এখানে একা একা বসে কাঁদছ কেন?” শুনে সে মুখ তুলে দেখে পলা আন্টি তার সামনে দাঁড়িয়ে।
পলা আন্টি সরোদদাদাদের ক্লাসে বায়োলজি পড়ান, একতারা তাঁর কোন ক্লাস করে নি। পলা আন্টি সবসময়েই গম্ভীর হয়ে থাকেন আর সরোদদাদা এই একজন টিচারকেই ভয় পায়। শেষকথাটা মনে করে একতারার ভয়টা একটু কমে গেল। আর তখনি তিনি আবার গম্ভীর স্বরে প্রশ্ন করলেন, “এখানে একা একা বসে কাঁদছ কেন?”
প্রথমবারে সেই প্রশ্ন শুনে একতারা ভয়ে নিজের সমস্ত কান্না গিলে নিয়েছিল। কিন্তু পলা আন্টি ঐ যে বারবার “একা একা” বলছেন, সেটা শুনে ওর আবার কান্না পেয়ে গেল। তখন পলা আন্টি ওর সামনে দাঁড়িয়ে থেকে প্রশ্ন করে করে একটা একটা করে একতারার সব গোপন দুঃখ জেনে ফেললেন। তারপরে সব শুনে একটু হেসে বললেন, “উফফ, সরোদের মাথাতে আসেও বটে।”
কিন্তু অন্ততঃ আজকের জন্যে একতারার দুঃখের মুল কারণ সরোদদাদা নয়। তাকে যে তার বাবা-মা হাসপাতাল থেকে নিয়ে এসেছেন, সেটা তো আর পালটে যাচ্ছে না। তাই একতারাও মুখ গোমড়া করেই রইলো।
॥ ৩॥
পলা আন্টি একটু চুপ করে ভাবলেন। তারপরে বললেন, “আচ্ছা, আমি যদি তোমাকে প্রমাণ করে দিই, সেতারের কাছে তুমি আর সরোদ সমান সমান, তাহলে চলবে?”
“তা কীকরে হবে, আমি তো ওদের কাজিন।” একতারা বলল।
“খুব ভালো পয়েন্ট!” পলা আন্টি’র মুখে সেই একচিলতে হাসিটা কি ফুটেই মিলিয়ে গেল? তিনি এবারে একতারার পাশে বাঁধানো স্ল্যাবে বসে পড়লেন। “আচ্ছা, আমাকে বলো, তুমি সিব্লিং মানে জানো? বাংলায় যাকে বলে সহোদর?”
“যারা একই মায়ের পেটু থেকে …” বলতে বলতে একতারা থেমে গেল। এটা সরোদদাদা’র কালকের কথার সঙ্গে ঠিক যেন মিলছে না।
“পেটু নয়, পেট … আমরা এখন বড় হয়েছি, ক্লাস ফাইভে পড়ি, আমরা এখন বড়দের শব্দগুলো ব্যবহার করব। আর যমজ কাকে বলে?”
একতারা আন্টি’র মুখের দিকে তাকাল।
আন্টি বললেন “যমজ হল সেইসব সিব্লিং, যারা একসঙ্গে জন্মেছে। সব যমজই সিব্লিং, কিন্তু খুব কম সিব্লিং-ই যমজ। মোটামুটি ১০০০ জন মায়ের বেবি হলে ধরে নাও ১৬ জনের টুইন্স হয়। তাহলে যমজ, এমনি সিব্লিং, আর কাজিন-দের মধ্যে পার্থক্য আমরা জানি তো?”
একতারা ঘাড় নাড়ল।
“বেশ, এবার তোমাকে ট্যুইন্স-দের, বা যমজদের নিয়ে আরেকটা কথা বলি। টুইন্স-দের অনেক রকমফের হয়, আমাদের জন্যে এখানে দু’রকম যমজ ইম্পর্ট্যান্ট। এক হলো, আইডেন্টিক্যাল ট্যুইন্স, যেমন তোমার মা আর আন্টি, মানে সেতারের মা, আর আরেকটাকে বলে ফ্রেটার্নাল ট্যুইন্স।”
এসব কথা এমনিতে একতারার মত ক্লাস ফাইভের ছাত্রীদের জানার কথা নয়, কিন্তু ওদের বাড়িতে যেহেতু তিনজোড়া যমজ আছে, তাই সে অনেকবার শুনেছে। সে তাড়াতাড়ি বলল, “মায়ের পেটুতে … পেটে একটা ডিম ফেটে দুটুকরো হয়ে গেলে আর তার থেকে দুটো বেবি হলে তাদের বলে আইডেন্টিক্যাল ট্যুইন্স, আর … পে-টে … যদি দুটো আলাদা ডিম থেকে দুটো আলাদা বেবি হয়, তাহলে তাদের বলে ফ্রেটার্নাল ট্যুইন্স।”
“ভেরি গুড” একতারা এবারে দেখল পলা আন্টির মুখটা বেশ হাসি-হাসি হয়ে উঠেছে, “ঠিক এই ভাষায় আমরা পরীক্ষার খাতায় হয় তো লিখব না এটা, কিন্তু ডিমের ব্যাপারটা তুমি মোটের ওপরে ঠিক বলেছ। আচ্ছা, এবারে তোমাকে আর একটা নতুন জিনিস বলি। জিন, জি-ই-এন-ই। এই যে প্রত্যেকটা মানুষ আলাদা, দেখতে হোক, স্বভাবে হোক, বুদ্ধিতে হোক, কোথাও তারা সামান্য হলেও স্বতন্ত্র বা ইউনিক, সেটা নিয়ন্ত্রণ করে এই জিন। একজন বেবি জন্মের সময়ে অর্ধেক জিন পায় তার বাবার থেকে, আর অর্ধেক মায়ের থেকে। কিন্তু বাবার জিনগুলোর কোন অর্ধেকটা সে পাবে, আর মায়েরই বা কোন অর্ধেকটা পাবে, সেটা আগে থেকে আমরা জানি না। এই অব্দি ক্লিয়ার?”
একতারা ঘাড় নাড়ল আবার, কিন্তু তার মুখ আবার এইসব শক্ত শক্ত জিনিস শুনে একটু গম্ভীর হয়ে গিয়েছে।
॥ ৪॥
“এইবারে হল সবচে মজার জিনিস!” পলা আন্টি বললেন। “আইডেন্টিক্যাল ট্যুইন্সরা যেহেতু একটাই ডিম ভেঙে তৈরী হয়, তাদের জেনেটিক গঠন একইরকম হয়। পুরো মিল থাকে। এমনি সিব্লিং-দের ক্ষেত্রে মিল থাকে মোটামুটি হাফ বা পঞ্চাশ শতাংশ, আর ফার্স্ট কাজিনদের ক্ষেত্রে মোটামুটি হাফের হাফ, কারণ তাদের বাবা বা মা’রা সিব্লিং ছিল। ফ্রেটার্নাল ট্যুইন্সদের মধ্যেও মিল থাকে সিব্লিং দের মতই, ওই অর্ধেক বা পঞ্চাশ শতাংশ।”
একতারা দমে গেল, তাহলে ও কী করে সরোদদাদা’র সমান হবে সেতারদিদি’র কাছে!
পলা আন্টি সেটা লক্ষ্য করে হাসলেন। “আচ্ছা, তুমি কোয়াটার্নারি ফ্যামিলি কাকে বলে জানো?”
একতারা এবারে পাশে ঘাড় নাড়ল। না, সে শোনে নি।
“কোয়াটার্নারি ফ্যামিলি হল যদি একজোড়া আইডেন্টিক্যাল ট্যুইন্স আরেক জোড়া আইডেন্টিক্যাল ট্যুইন্সকে বিয়ে করে, তাহলে তাদের একসঙ্গে বলে কোয়াটার্নারি ফ্যামিলি।”
একতারা বলল, “বুঝলাম না …” বলেই একটু ভয়ে ভয়ে পলা আন্টিকে দেখে নিল।
পলা আন্টি কিন্তু রাগলেন না। তিনি বললেন, “আচ্ছা আমরা একটা উদাহরণ নিই, ধরো দুজন বয় আছে এ আর বি, আর দুজন গার্ল আছে ক আর খ, এখন এ যদি ক-কে বিয়ে করে, আর বি যদি খ-কে …”
একতারা এবারে নির্দ্বিধায় পলা আন্টিকে থামিয়ে দিল “বয়-গার্লরা বিয়ে করতে পারে না। চাইল্ড ম্যারেজ ইস ইল্লিগ্যাল, বাল্যবিবাহ বেআইনি …”
পলা আন্টি একতারার দিকে একমুহূর্ত তাকিয়ে রইলেন। তারপরে আবার হাসলেন, “তুমি ঠিক বলেছ, ভেরি গুড, … আচ্ছা যদি এ-বি-ক-খ বড় হয়ে, অ্যাডাল্ট হয়ে বিয়ে করে তাতে কোন প্রবলেম নেই, যারা ছোটবেলায় আইডেন্টিক্যাল ট্যুইন্স ছিল, তারা বড় হয়েও আইডেন্টিক্যাল ট্যুইন্স থাকবে? তাতে সমস্যা নেই তো।”
একতারা ঘাড় নাড়ল, না নেই।
“তাহলে তারা বড় হয়ে বিয়ে করলে চারজনকে একসঙ্গে কি বলে বললুম এক্ষুণি?”
“কোয়ারটার্নারি …”
“কোয়াটার্নারি, কোয়ার নয়… অন্ততঃ এই বানানটাই আমি নেটে সব জায়গায় দেখেছি। কিউ ইউ এ টি এ আর এন এ আর ওয়াই। কোয়াটার্নারি ফ্যামিলি।
এতক্ষণে একতারা যেন খানিকটা ধরতে পেরেছে, পলা আন্টি কী বলতে চাইছেন। সে বলল, “মানে, আমাদের বাড়ির মত? মানে বাবা হল এ, জ্যেকু বি। মা হল … ক আর মাসি খ।”
পলা আন্টি বললেন, “রাইট। এবারে সবচেয়ে ইম্পর্ট্যান্ট পয়েন্ট। আইডেন্টিক্যাল ট্যুইন্স দের জিনে কতটা মিল থাকে বলেছি?”
একতারা’র মনে ছিল, সে বলল, “পুরোটা”।
“রাইট। সেজন্যে কোয়াটার্নারি ফ্যামিলির দুদিকেই যেহেতু আইডেন্টিক্যাল ট্যুইন্স, কোয়াটার্নারি ফ্যামিলির কাজিনদের জিনের মিল হয় ফিফটি পার্সেন্ট বা অর্ধেক, অর্থাৎ সিব্লিং-দের মত। অর্থাৎ, তোমার আর সেতারের জিন দেখলে সবাই বলবে তোমরা সিব্লিং, কাজিন নও। বোঝা গেল? ঠিক সেতার-সরোদের মত।”
একতারার মনে শেষ একটা শঙ্কা, “কিন্তু সরোদদাদা আর সেতারদিদি তো ট্যুইন্স। ওদের তো হান্ড্রেড পার্সেন্ট মিল।”
“ওরা তো ফ্রেটার্নাল ট্যুইন্স। বললুম না, ফ্রেটার্নাল ট্যুইন্স-দের জেনেটিক মিল সিব্লিং-দের মতই, মানে অর্ধেক।”
“কিন্তু কী করে বুঝব ওরা আইডেন্টিক্যাল ট্যুইন্স নয়? সরোদদাদা তো বলেছে ওরা আইডেন্টিক্যাল।”
পলা আন্টি হাসলেন, “যখন ট্যুইন্স-দের একজন ছেলে আর একজন মেয়ে হয়, তখন জানবে তারা কখনোই আইডেন্টিক্যাল ট্যুইন্স নয়। … এটা ও জানে, সেটা আমি জানি, … সরোদটা খুব বদমাইশ হয়েছে।”
এতক্ষণে একতারা’র মন থেকে সমস্ত দুঃখ চলে গেল। পলা আন্টিও বলেছেন, “সরোদদাদা বদমাইশ।”
সরোদদাদা খুব বদমাইশ।
সুত্রঃ
https://people.com/salyers-twins-celebrate-5-year-anniversary-quaternary-marriage-my-extraordinary-family-7567568