ইলশেগুঁড়ি ২৯তম সংখ্যা (শারদীয়া)
ইলশেগুঁড়ি ২৯তম সংখ্যা (শারদীয়া)
স্ফিতোদর কথাগুলো পাস কাটিয়েই নেমে পড়ি,
পা-দানিতে হাটখোলা দরজার কোন লেশ নেই।
আস্তে...আস্তে লেডিস—
কন্ডাকটরের হাঁক।
চাপড়ে দিচ্ছে কালো রঙের অক্ষর-ফুল,
মুখে অনেক নাম।
সে লোক ডাকছে—
কালো মাথার লোক,
সাদা মাথার লোক।
সাদা কালো মাথায় ভিড় জমে উঠছে।
ও দাদা গল্ফগ্রীন যাবেন?
ও দিদি, সিট আছে।
নেমে পড়লাম ট্রাফিক লাইটের নিচে।
—লাল হলুদ সবুজ
দুধসাদা মানুষ হাতের খেলায় জট ছাড়াচ্ছে,
গাড়ি এগোচ্ছে।
লেফট রাইট -
রাইট লেফট-
আমার এখানে নামার কথা নয়,
দু একটা দোকানদার চিনলেও
জায়গাটা আমার নয়।
ওপার থেকে কাঠমহিলা আসছে, মাথায় বস্তা বন্দি শালুক।
মাথাগুলো যেন লটকানো কাঠবেড়ালি—
সে জানে কোথায় যাবে।
আমি নামলাম জেব্রাক্রসিং’র ওপর,
বাসটা ওপর দিয়ে চলে গেল—
শুয়োরের বাচ্চা!
নাহ বলিনি,
আর যদি বলেও থাকি তা শোনার জন্য কেউ নেই।
এখন সিগন্যাল গ্রীণ,
যার যেদিকে যাবার কথা সে সেই দিকেই যাচ্ছে।
লেফট লেফট লেফট-
রাইট রাইট রাইট-
এখানে নামার জন্য আমায় কেউ জোর করেনি,
সিগন্যাল গ্রীণ দেখে আমি ঘরের কথা ভাবছিলাম-
পেছন থেকে ধাক্কা দিতেই
মানুষ সমেত হুড়মুড়িয়ে পড়লাম-
রাস্তায় নয় গ্রীণহাউসে।
বাসটা কোথায় যাচ্ছিল আমার মনে নেই,
যেখানে উঠেছিলাম সেখানে বাসস্টপের মাঝে জলের কল ছিল।
নামছি কুচকুচে কালো মাথার ওপর।
কন্ডাকটর চেঁচাচ্ছেন,
‘‘ও দিদি এটা নামার জায়গা নয়’’
আমি ছুটছি—
খুব একটা ভালো ছুটতে পারি না, তাও ছুটছি...
ব্যাগের ভেতর টাটকা লিঙ্গ
রক্ত পড়ছে।
টপ টপ টপ...
আমি ছুটছি—
লেফট রাইট লেফট-
লেফট রাইট লেফট-
কোথাও কোন লোক নেই।
সামনে অদ্বৈত মহাশূন্য—পেছনে অন্ধ দর্শন।
আজ যা করেছি তা বহুদিন থেকেই করতে চেয়েছি।
আমার ডান হাত খেতে জানে, বাঁ হাত ঝুল ঝাড়তে।
আমার কাকে ভালোবাসা উচিত?
আমার কোথায় নামা উচিত?
কন্ডাক্টর যতগুলো জায়গা বলে আমি কোথাও যাইনি।
ড্রাইভার স্টিয়ারিং ঘোরালে
পায়ের তলায় জড়ো হয় প্যানপেনে ইঁদুর।
ব্রেক কষলে মাংসের গন্ধ পাই,
ডাইরি খুলে ঝালিয়ে নিই কোথায় কবে তারা খসেছিল ;
আর চুলের হিসেব মেলাতে
মাছরাঙা উড়িয়ে এসেছিল খাঁকি ক্যাম্পেল।
সা...ব...ধা...ন...
গট...মট...গট