ইলশেগুঁড়ি ২৯তম সংখ্যা (শারদীয়া)
ইলশেগুঁড়ি ২৯তম সংখ্যা (শারদীয়া)
দেখতে পাচ্ছ তুমি ওই উত্তাল সমুদ্রের ঢেউগুলো?
সেগুলো আজ যেন বিশ্রামহীন, দুরন্ত, চঞ্চল।
নির্জন সৈকতের পাথরের উপর আছড়ে পড়ছে ওদের ক্রোধ,
কোন অজানা প্রশ্নের জবাবে আজ ওরা এত বিহ্বল?
বলতে পারবে ভেবে? জানি, তুমি পারবে না।
উত্তর মালার সঞ্চিত গুপ্তধনের উৎস
খুঁজে পেলেও তুমি পারবেনা।
বলতে পারবে না তারা, যারা কোনদিন
ব্যর্থতার আঘাত গ্রহণ করেনি।
জীবনে যারা শুনেছে কেবল আনন্দের প্রতিধ্বনি-
যারা এখনো দুর্বিষহ হয়ে পড়েনি পরিস্থিতির আগুনে,
এই মুহূর্তে, এই ঢেউগুলোর শব্দ ওদের কাছে মূল্যহীন।
কিন্তু যারা জীবন পথের প্রত্যেক পদে,
উপহার পাচ্ছে ব্যর্থতা,
তাদের কথা কি কেউ মনে রাখে?
এই ঢেউগুলোর মধ্যে খুঁজে পাচ্ছে তারা,
তাদের অনুভূতি।
রহস্যময় রাতের চাঁদ, তারাগুলি
আজ থাকবে হয়ে তাদের সাক্ষী।
কেউ হয়তো খুঁজবে পথের দিশা সন্ধ্যাতারার বুকে।
আর দিক নির্দেশ করলেও বা কি?
বাস্তবতার ঢেউ কি তাকে যেতে দিবে সেইদিকে?
বাস্তবতার শেকড় যে বড়োই কঠিন, মজবুত!!
অনুভূতির ভিত টলমল করে তার কাছে।
আর তাই কল্পনাকেও স্বীকার করতে হয় ব্যর্থতা।
ওই দেখছ বড়ো ঢেউটাকে?
সে চাইছে সবার উপরে উঠতে,
কিন্তু ওই যে প্রকান্ড পাথরটা!
সেটি যেন তার সামনে চিনের প্রাচীর।
যেন কোনো ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি বহন করছে দৃশ্যটি।
কিন্তু ভেবে দেখেছ কি,
যদি ওই পাথরের কাছে হেরে না গিয়ে
ঢেউটা এগিয়ে চলত, তাহলে?
নাম হত তখন তার জলচ্ছ্বাস।
ঠিক এভাবেই যখন চেষ্টারত মানুষরাও
বারবার আলিঙ্গন করে ব্যর্থতাকে,
তখনই হঠাৎ একসময়ে নব জলচ্ছ্বাসের জন্ম হয়।
তছনছ হয় যায় তখন সব। তাই সাবধান!!
কে জানে কোনদিন হয়তো, ওদের চেষ্টাগুলোই
লিখবে নতুন দিনলিপির স্রোত।
তবে সে স্রোতের সাথে সেদিন
টক্কর নেওয়াটা হয়ে উঠবে দুষ্কর।
হয়তো সত্যিই মন-স্থিতির জোর
পরিস্থিতিকে বোঝাবে ব্যর্থতার সংজ্ঞা।
তখনই তার নাম হবে এক্সেপশন।