ইলশেগুঁড়ি সাহিত্য পরিবার
সুস্থ সাহিত্য, শিল্প ও সংস্কৃতির প্রসারে লেখক ও পাঠকের মিলিত প্রচেষ্টায় গৌরবের এক দশক
কবিতার পত্রিকা ‘‘কবিতাব্রত’’
সুস্থ সাহিত্য, শিল্প ও সংস্কৃতির প্রসারে লেখক ও পাঠকের মিলিত প্রচেষ্টায় গৌরবের এক দশক
কবিতার পত্রিকা ‘‘কবিতাব্রত’’
আমায় নাকি ওরা মানুষ করতে পারেনি!
দুটো রাজপথ যেখানে এসে মেশে, দুটো নদী মগ্ন তুরীয় রতিসুখে,
যেখানে কশেরুকায় বয়ে চলে কস্তুরী বমনের শব্দাঙ্ক, সেখানে অর্জুন গাছের তলায় বসে শালপাতায় মুড়ে কুরকুটের চাটনি খাইয়েছিল আমায়, লাউডিহার ‘বাহামনি সারেন’|
বদলে ওর দুটো ঊষর ঠোঁটে, ছেনি-হাতুড়ির ভাস্কর্য্য খোঁদাই করেছিলাম, উদ্দাম প্রণয়ী কনভার্সেশনে।
ওকে কথা দিয়েছিলাম, বাদনা পরবে ছৌ নাচবো একসাথে,
ভাবনার পরবাসে ওর মরদ হবো।
ভীষণ এক ভীরু স্তাবকতার মাঝে, কবিতা সভায় বসে আমি মুখর শরীরী ভাষায় একটি ‘অশ্লীল’ কবিতা পড়েছিলাম।
আমার কাব্যের মসৃন উরুতে আলতামিরা আঁকা দেখে, ওরা সবাই তেড়ে এসেছিল, বলেছিল, “ওরা আমায় মানুষ করতে পারেনি!”
পুরোনো বাড়িটার গা থেকে পলেস্তারা খসে পরে, জন্ম নিয়েছিল এক নতুন দেশ।
আমার ধর আর মুণ্ডুর মাঝখান থেকে একটা অসুখী বাতাস, ফোঁস করে উড়ে গিয়ে জমা হয়েছিল, লেখার টেবিলটার ত্রিকোণ প্রিজম অববাহিকায়।
স্বস্তার মদ কিনে ফেরার সময় একদিন দেখেছিলাম, রঙতুলির ধারাপাতে কবিতার
‘পোস্ট মডার্নিজম’ কটা ময়ূরের পালক কাঁধে করে দাঁড়িয়ে আছে।
ওর উদাস জ্যামিতিক ইতিবৃত্তে, চাঁদগরীর আলো কিনে দিতে চেয়ে দশটা টাকা দিয়েছিলাম, আর চেয়েছিলাম ওর চোখের উদযাপনহীন শূন্যতায়।
নাগরিক কাশবনের অপু দূর্গা আজও কালো কাঁচের বাইরে, ডিভাইডারের দিগন্তে এক্কা দোক্কা খেলে।
আমি অমানুষ চোখে ওদের ছেলেখেলা দেখি।
আমি ব্রেখট্ পড়িনি, পড়িনি কাফকা, কামু কিংবা দস্তয়েভস্কি।
তবু বিলাসী শোকের বিনিময়ে চুরি যাওয়া অধিকারের প্রশ্নে, সরু তীক্ষ্ণ গলায় আমি চিৎকার করে উঠেছিলাম।
ওরা সবাই তেড়ে এসেছিল, বলেছিলো, “আমায় ওরা মানুষ করতে পারেনি!”
আমায় আমার দেশ মানুষ করতে পারেনি।
আমায় আমার জমি মানুষ করতে পারেনি।
আমায় আমার বিদেহী আত্মা মানুষ করতে পারেনি।
একদল পাড়াতুতো কাকের দলে ভিড়তে গিয়ে, আমায় কি মানুষ হতেই হবে?